অল্প টাকায় শুরু করা যাবে এমন কয়েকটি লাভজনক বিজনেস আইডিয়া

লাভজনক বিজনেস আইডিয়া

বর্তমান সময়ে চাকরির বাজার বেশ প্রতিযোগিতামূলক। ভালো চাকরি পেতে অনেক ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই অনেকেই চাকরি ছেড়ে নিজেদের ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছেন। কিন্তু ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন হয় বলে অনেকেই তাতে ভয় পান। তবে অল্প টাকায়ও কিছু ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। এখানে এমন কয়েকটি ব্যবসা আইডিয়া দেওয়া হলো যা অল্প টাকায় শুরু করা যায়:

১. ট্রাভেল এজেন্সি

বর্তমানে মানুষ ভ্রমণের প্রতি আগ্রহী। তাই ট্রাভেল এজেন্সির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য খুব বেশি পুঁজির প্রয়োজন হয় না। আপনি যদি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করতে চান তাহলে প্রথমে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। তারপর বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে হোটেল, ফ্লাইট, ট্রেন, বাস ইত্যাদির বুকিং করার অনুমতি নিতে হবে। আপনি যদি ভালো ভাবে মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে এই ব্যবসা থেকে ভালো আয় করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: অল্প টাকায় ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন

২. প্রোডাক্ট এফিলিয়েশন বিজনেস

প্রোডাক্ট এফিলিয়েশন বিজনেস একটি অনলাইন ব্যবসা। এই ব্যবসায় আপনি অন্য কোম্পানির পণ্য বা সেবা বিক্রি করে কমিশন পাবেন। আপনি যদি কোনো পণ্যের প্রোডাক্ট লিংক আপনার ওয়েবসাইটে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করেন এবং সেই লিঙ্ক থেকে কেউ যদি সেই পণ্যটি কিনেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন। এই ব্যবসা থেকে ভালো আয় করতে হলে আপনাকে একটি ভালো ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়া পেজ তৈরি করতে হবে এবং নিয়মিত পোস্ট করতে হবে।

৩. ডেলিভারি ব্যবসা

অনলাইনে কেনাকাটার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। তাই ডেলিভারি ব্যবসার চাহিদাও বাড়ছে। আপনি যদি ডেলিভারি ব্যবসা করতে চান তাহলে প্রথমে একটি মোটরসাইকেল বা গাড়ি কিনতে হবে। তারপর অনলাইন শপিং ওয়েবসাইটগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে ডেলিভারি করার অনুমতি নিতে হবে। প্রথমে আপনি নিজে একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে ডেলিভারি দেওয়ার কাজ করতে পারেন পরবর্তীতে লোক নিয়োগের মাধ্যমে ধীরে ধীরে আপনার ব্যবসার এলাকার পরিধি বাড়াতে পারেন। আপনি যদি ভালোভাবে কাজ করতে পারেন তাহলে এই ব্যবসা থেকে ভালো আয় করতে পারবেন।

৪. ই-কমার্স ব্যবসা

ই-কমার্স ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য মোটামুটি লেভেলের পুঁজির প্রয়োজন হয়। আপনি যদি ই-কমার্স ব্যবসা করতে চান তাহলে প্রথমে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। তারপর বিভিন্ন পণ্য সরবরাহকারীর কাছ থেকে পণ্য কিনে তা আপনার ওয়েবসাইটে বিক্রি করতে হবে। আপনি যদি ভালোভাবে মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে এই ব্যবসা থেকে ভালো আয় করতে পারবেন।

৫. ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিং একটি অনলাইন কাজ। এই কাজের জন্য কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। আপনি আপনার বাসা থেকেই এই কাজ করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যায়। যেমন: ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং ইত্যাদি। আপনি যদি কোনো একটি বিষয়ে দক্ষ হন তাহলে সেই বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে এই সেক্টর থেকে ভালো আয় করতে পারবেন।

৬. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিজনেস

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিজনেস শুরু করার জন্য মাঝারি লেভেলের বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়। এই ব্যবসায় বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট, যেমন বিবাহ, পার্টি, কর্পোরেট ইভেন্ট, ইত্যাদির পরিকল্পনা এবং পরিচালনা করা হয়। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করার জন্য আপনার একটি ছোট টিম তৈরী করতে হবে। তাছাড়া, এই ব্যবসায় সৃজনশীলতা এবং টিম ম্যানেজমেন্টেরও প্রয়োজন হয়।

৭. কফিশপ

কফি একটি জনপ্রিয় পানীয়। বাংলাদেশের মানুষ কফিশপে বসে কফি খেতে এবং আড্ডা দিতে পছন্দ করে। তাই কফিশপ বাংলাদেশে একটি লাভজনক ব্যবসা। আপনি অল্প পুঁজিতে ভাড়া করা জায়গায় একটি ছোট দোকান শুরু করতে পারেন, অথবা একটি ভ্যান বা ট্রাক থেকে একটি মোবাইল কফিশপও পরিচালনা করতে পারেন।

৮. ট্যুর গাইড 

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই বেড়াতে ভালোবাসে। আর বেড়ানোর জন্য তারা অনেক সময়েই নির্ভর করে ট্যুর গাইডের ওপর। ফ্লাইট, ট্রেনের টিকিট বুকিং, হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ ট্যুরটি প্ল্যান করা পুরোটার দায়িত্ব আপনার। অফিস, স্কুল বা কলেজের ট্যুর করাতে পারলে নিয়মিত ব্যবসা পাওয়া সম্ভব। এটি কম খরচে লাভের ব্যবসা। আপনাকে শুধু একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে, আর যোগাযোগ তৈরি করতে হবে বিভিন্ন জায়গার হোটেলের সঙ্গে, জেনে নিতে হবে তাদের ট্র্যাভেল এজেন্ট কমিশনের রেট। খুঁজে বের করুন নতুন নতুন জায়গা। বর্তমানে সব থেকে লাভজনক ব্যবসার একটি ট্যুর অপারেটিংয়ের ব্যবসা।

৯. ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফি

আপনি যদি ফটোগ্রাফিতে ভালো হন, তবে আপনি ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের ইভেন্ট, যেমন বিবাহ, পার্টি, রিসিপশন ইত্যাদিতে ফটোগ্রাফারদের অনেক ডিমান্ড থাকে। আপনি ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার বিভিন্ন ফটোগ্রাফি এবং পোর্টফোলিওগুলি যদি ভালোভাবে প্রচার করতে পারেন তাহলে সেখান থেকে বিভিন্ন ইভেন্টে কল পাবেন।  তাছাড়া এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনার তোলা ছবি অনেক ভালো দামে বিক্রিও করতে পারেন। 

১০. এডুকেশনাল কন্টেন্ট সেলিং

আপনি যদি কোনো বিষয়ে দক্ষ হন তবে সে বিষয়ে এডুকেশনাল কন্টেন্ট তৈরী করে বিক্রি করতে পারেন। আপনি বিভিন্ন কন্টেন্ট যেমন অনলাইন কোর্স, ই-বুক, চেকলিস্ট, ইনফোগ্রাফিক, ইত্যাদি তৈরি করতে পারেন। তারপর, আপনি আপনার কন্টেন্টগুলো আপনার ওয়েবসাইটে বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করতে পারেন। 

কিছু টিপস

  • ব্যবসা শুরু করার আগে ভালোভাবে গবেষণা করুন।
  • একটি ভালো ব্যবসা পরিকল্পনা তৈরি করুন।
  • আপনার ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করুন।
  • ভালোভাবে মার্কেটিং করুন।
  • গ্রাহকদের সন্তুষ্টির দিকে নজর দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *